কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে দেশে বড় ভূমিকা রেখে আসছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের খামারি ও কৃষকরা। এবার কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার কয়েক হাজার খামারি উৎপাদন করেছেন প্রায় এক লাখেরও বেশি গরু। এছাড়াও প্রায় ১০০০০ ছাগল পালন করেছেন। কিন্তু করোনার কারণে এবার প্রায় ৫০ ভাগ পশু অবিক্রিত থাকতে পারে বলে খামারি ও কৃষকরা আশঙ্কা করছেন। এতে লাভত দূরের কথা আসল তোলায়ই খামারীদের এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
বিভিন্ন খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবার ঈদের দু-এক মাস আগে থেকেই খামারিদের বাড়ি বাড়ি এবং গরুর হাটে ঘুরে ব্যাপারীরা গরু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন হাটে তুলতেন। এবার সেই সংখ্যা অনেক কম। এছাড়া শাহজাদপুরের পশুর বড় হাট রয়েছে চারটি। এসব হাট ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে আরও ছোট ছোট হাট-বাজারে বিক্রির জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার গরু-ছাগল নিয়ে আসছেন খামারিরা। কিন্ত কেনা-বেচা একদম কম। ঈদুল আজহার আর মাত্র দু সাপ্তাহ বাকি থাকলেও বাহিরের ব্যাপারিদের তেমন একটা দেখা মিলছে না।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৯০ হাজারের মতো গরু পালন হয়েছিল। খামারিদের লাভও হয়েছিল। কিন্তু এবার গতবারের তুলনায় গরুর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারের বেশি হলেও কেনা-বেচা না হওয়ায় হতাশায় খামারিরা।
উপজেলার রতনকান্দী গ্রামের খামারি সাইফুল ইসলাম সারা বছর বাড়িতে কমবেশি গরু পালন করেন। তবে কোরবানির ঈদ সামনে এলে লাভের আশায় গরুর সংখ্যা বাড়ান। এবারও তার খামারে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১২টি গরু রয়েছে। দিন-রাত গরু পরিচর্যায় করছেন। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে তার দুশ্চিন্তাও ততই বাড়ছে। যারা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য জেলায় গরু বিক্রি করেন তারা অপেক্ষা করছেন বাজার পরিস্থিতি দেখার জন্য।
উপজেলার পুরানটেপরি গ্রামে খামারি মুকুল শেখ বলেন, ‘গত বছর গরু বিক্রি করে মোটামুটি লাভ হয়েছিল। তাই এবারও পালন করেছি। গো-খাদ্যের যে দাম বেড়েছে তাতে লোকসান হবে বলে মনে হচ্ছে। অন্য বছর আগেই ব্যাপারিরা বাড়ি আসত। এবার কেউ আসছেন না। দু-একজন এলেও দাম অনেক কম বলছেন।’